প্রেমিকের দেয়া বিয়ের প্রতিশ্রুতি পুরণের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজ ছাত্রী প্রেমিকা পারুলের আমরণ অনশনের দ্বিতীয়দিন অতিবাহিত। কথিত প্রেমিক শাকিল বিয়ে না করার প্রত্যয়ে বাড়ি ছেড়ে উধাও। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি পশ্চিমপাড়া গ্রামে।
ঘটনার বর্ণনায় জানা যায়, ফুলকি পশ্চিমপাড়ার এমডি মাসুদ রানা মান্নানের ছেলে উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সদস্য শাকিল রানা সচিব ফেসবুকের মাধ্যমে দীর্ঘ আড়াই বছর পূর্বে সখীপুর উপজেলার হতেয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান মাস্টারের মেয়ে করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চুড়ান্ত পর্বের ছাত্রী পারুল আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে দীর্ঘদিন কথোপকথনের পর গত এক বছর পূর্বে তাদের সাথে স্বাক্ষাৎ হয়। স্বাক্ষাতের পর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক আরও গভীর হয়। প্রেমিক শাকিল রানার প্ররোচনায় মেয়েটি তার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ে। মেয়েটির দাবী এক পর্যায়ে শাকিল রানা তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ডেটিংএ নিয়ে যায়। এর ধারাবাহিকতায় শাকিল মেয়েটিকে দ্রুত বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে স্ত্রীর পরিচয়ে ঢাকার আবাসিক হোটেলে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির সাথে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক হাসিল করে বলে পারুলের দাবি। এর পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার দৈহিক মেলামেশারও অভিযোগ করেন। মেয়েটি আরও জানায়, গত ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতারক শাকিল তার সাথে শেষবারের মতো শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।
এসব ঘটনার প্রমানাদী মেয়েটির কাছে আছে বলে দাবি করেন। শাকিলের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পারুল বিয়ে করার কথা বললে, শাকিল তা অস্বীকার করে। শাকিলের এমন প্রতারনামূলক সিদ্ধান্তের কথায় সর্বস্ব হারানো মেয়েটির মাথায় যেন বাজ পড়ে। এমতাবস্থায় মেয়েটি কোন উপায়ান্তর না পেয়ে গত ৮ মে (সোমবার) সকাল ৭ টার দিকে শাকিলের বাড়িতে অবস্থান নিতে বাধ্য হয় বলে জানান। ঐদিন শাকিলের সাথে পারুলের কিছু সময় কথা হওয়ার পর হঠাৎ শাকিল মেয়েটিকে রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তখন মেয়েটি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে ঘটনার সমাধানের জন্য শাকিলের স্বজনরা মেয়েটিকে বুঝিয়ে তার অভিভাবকদের আনতে বলে। দুপুরের পর পারুলের অভিভাবক পক্ষ ঘটনাস্থলে হাজির হলেও শাকিল ও তার কোন নির্ভরযোগ্য অভিভাবক হাজির হয়নি। পরে ফুলকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবুল ৯মে (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় উভয় পক্ষের অভিভাবকদের ঘটনাস্থলে হাজির হতে বলেন। পারুলের লোকজন উপস্থিত থাকলেও শাকিল ও তার পক্ষের লোকজন উপস্থিত না হওয়ায় ঘটনার কোন শুরাহা হয়নি বলে জানা যায়।
এ ব্যাপারে অনশনরত তরুণী পারুল সাংবাদিকদের বলেন, আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শাকিল আমার সবকিছু লুটে নিয়েছে, সে আমাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার আর কোন পথ থাকবে না। এদিকে অভিযুক্ত শাকিলের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে সে পারুলকে বিয়ে না করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। সে আরও বলে মাত্র তিন মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পারুলের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে, প্রেমের মতো কোন সম্পর্ক তৈরি হয়নি, কোন একটি চক্র হয়তো আমাকে ফাঁসানোর জন্য মেয়েটিকে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনাটির সমাধানের কোন চেষ্টাই সফল হয়নি। প্রশাসনিকভাবেও কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা। এব্যাপারে বাসাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে। ঘটনাটি দ্রুত সমাধান না হলে যে কোন মূহুর্তে ঘটতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন